নতুন কোন পোশাক ও প্রসাধনী দ্রব্য ব্যবহারের ইচ্ছা সকলের থাকে। অর্থাৎ সকলের মধ্যেই ফ্যাশনের অনুভূতি বর্তমান। তবে পারফেক্ট ফ্যাশনের অনুভূতি যে সকলের আছে তা কিন্তু নয়। সে কারনে আমরা বিভিন্ন সেলিব্রেট্রিদের অনুকরনে ড্রেস, জুতো, হেয়ার কাটিং নকল করি। কিন্তু একজনের পরিহিত ড্রেস যে অন্যজনের ক্ষেত্রে নিখুঁত মানানসই হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

তবে সেলিব্রেটি হলেই যে প্রকৃত ফ্যাশনের অনুভূতি থাকবে তা কিন্তু নয়। বর্তমানে ডিজিটাল বিপ্লবের যুগে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনেক ফ্যাশন (Fashion) সচেতন বা ফ্যাশনে রুচি রাখা ব্যক্তি ফ্যাশন সম্পর্কে নিজেদের অনুভুতি অন্যদের সাথে শেয়ার করেছে।

এরা হলেন সোশ্যাল এক প্রকার প্রভাবক বা Social influencer। সোশ্যাল প্রভাবক বা Social influencer সাধারনত বিভিন্ন সোশ্যাল  মিডিয়া প্লাটফর্মে তাদের মিলিয়ন/বিলিয়ন ফলোয়ারের সাথে কোন পন্য বা সেবা সম্পর্কে নিজ মতামত ও সুপারিশ দেওয়ার কাজ করে থাকে। যারা কোন পোশাক, জুতো, প্রসাধনী সামগ্রী প্রভৃতি বিষয়ে সোশ্যাল প্লার্টফর্মে মতামত ও সুপারিশের কাজ করেন তাদের ফ্যাশন সোশ্যাল  প্রভাবক বলা হয়।

Camila Coelho, Olivia Palermo, Xenia Tchoumitcheva, Rati Tehri Singh, Juhi Godambe, Komal Pandey প্রভৃতি অন্যতম সফল ফ্যাশন সোশ্যাল  প্রভাবক ব্যক্তিত্ব। বিভিন্ন ড্রেস, জুতো, প্রসাধনী সামগ্রী সম্পর্কে নিজেদের মতামত দিয়ে থাকেন দিয়ে থাকেন এরা। একজন সোশ্যাল  প্রভাবক ব্যক্তি ঘরে বসে মিলিয়ন/বিলিয়ন ক্রেতা কাছে কোন পণ্যকে পৌঁছে দিতে সক্ষম। বিভিন্ন ব্রান্ডের কাছে এই সোশ্যাল  প্রভাবকরা কোন সম্পদের থেকে কম কিছু নয়। সে জন্য বর্তমান সময় বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্রান্ডগুলি তাদের পণ্যের প্রমোশনের জন্য প্রায়শই সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবকদের সাথে সহযোগে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।

সে কারনে সাম্প্রতিকালে অনেকে সোশ্যাল  ফ্যাশন প্রভাবক হিসাবে কেরিয়ার গড়ার ইচ্ছে প্রশণ করছে। আপনি জানলে খুশি হবেন যে আজকের দিনে নিজেকে একজন সফল ও জনপ্রিয় ফ্যাশন সোশ্যাল প্রভাবক হিসাবে গড়ে তোলা অনেকটাই সহজ।

কিন্তু শুরুতেই নানান প্রশ্ন উদয় হতে পারে, যেমন – কিভাবে একজন সফল ও জনপ্রিয় ফ্যাশন সোশ্যাল  প্রভাবক হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব, কোন সোশ্যাল মিডিয়া প্লার্টফর্ম ব্যবহার করা উচিৎ, কোন ধরণের কম্পানির সাথে কাজ করা ভালো, কিভাবে ব্রান্ডকে প্রমোশনের জন্য উৎসাহিত করা হয়, একজন  ফ্যাশন সোশ্যাল প্রভাবক হিসাবে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব ও ফ্যাশন সোশ্যাল প্রভাবক হিসাবে কেরিয়ারের ভবিষ্যৎ কি রকম প্রভৃতি। এই সকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পাশাপাশি ফ্যাশন প্রভাবক হিসাবে সফল  কেরিয়ার গড়ার হদিশ ও ফ্যাশন প্রভাবকের হওয়ার ব্লুপ্রিন্ট দেওয়া্র চেষ্টা করব এই প্রতিবেদনে।

ফ্যাশন প্রভাবক (Fashion influencer) ক্যারিয়ারের হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত

প্রথম : ফ্যাশন প্রভাবক (Fashion influencer)-এ ক্যারিয়ার গড়ার পূর্বে একটা বিষয় সম্পর্কে সঠিক ও পরিষ্কার ধারণা থাকা  অত্যান্ত জরুরী - তা হল ফ্যাশন প্রভাবক হিসাবে তার কাজ কি? অর্থাৎ ফ্যাশন প্রভাবক কি ধরণের কাজ করে থাকেন।

ফ্যাশন প্রভাবক হিসাবে কাজ করা মানে যে আভিজাত্যতা পূর্ন লাইভস্টাইল বা নানা ধরণের পোশাক পরে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি বা ভিডিও পোষ্ট করা নয়। একজন ফ্যাশন প্রভাবকের বহু দায়িত্বও থাকে যেমন ফ্যাশন সম্প্রিকৃত বিষয়ে রিচার্জ ও নতুন পরিকল্পনা তৈরি করা এবং তা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করা, নতুন ফ্যাশন টপিক নিয়ে আলোচনা ও মতামত দেওয়া, ফ্যাশন বিষায়ক বিভিন্ন কনটেন্ট প্রস্তুত করা প্রভৃতি।

দ্বিতীয় : একজন ফ্যাশন প্রভাবক হতে গেলে অবশ্যই তার ফলোয়ারদের সাথে ভালো কমিউনিকেশন করার গুন থাকা জরুরী। এছাড়াও নন্যতম টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। 

তৃতীয় : সবচেয়ে জরুরী হল ফ্যাশন বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান। এছাড়াও নতুন ফ্যাশন বিষায়ক খবরা-খবর সম্পর্কে সর্বদা নিজেকে আপডেট রাখা।

সফল সোশ্যল ফ্যাশন প্রভাবক হতে গেলে যে যে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন

• সঠিক বিষয় বা নিশ নির্বাচন করা : ফ্যাশন প্রভাবক হিসাবে কাজ করার পূর্বে একটি নির্দিষ্ট নিশ বা বিষয় নির্বাচন করা অতি অবশ্যই প্রয়োজন। অনেক নতুন ফ্যাশন প্রভাবক ক্যারিয়ারে শুরুতেই ভুল নিশ বা বিষয় নির্বাচনের জন্যই মুখ থুবড়ে পড়ে। নিশ নির্বাচনের পূর্বে নিশ সম্পর্কে পরিপূর্ন ধারণা ও সঠিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। এছাড়াও একটি নির্দিষ্ট নিশ বা বিষয় নিয়ে কাজ করলে সফল হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। শুরুতেই একাধিক নিশ বা বিষয় নিয়ে কাজ করলে সাফল্য পাওয়া অনেকাংশে কঠিন।
• ভালো মানের কনটেন্ট প্রস্তুত করা :
• নিজেকে ভিন্ন ভাবে প্রকাশ করা :
• নিয়মিত সক্রিয় থাকা :
• ফলোয়ারদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন :
• জনপ্রিয় ব্রান্ডের সাথে যোগাযোগ : 

ফ্যাশন প্রভাবক হওয়ার বেষ্ট সোশ্যাল প্লার্টফর্ম

নিজের ফ্যাশন প্রতিভা তুলে ধরার জন্য বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লার্টফর্ম হল ইনস্টাগ্রাম। পৃথিবী সিংহভাগ জনপ্রিয় ফ্যাশন প্রভাবক তাদের প্রতিষ্টা ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এই সোশ্যাল মিডিয়াতে।

এছাড়াও ফেসবুক, পিন্টারেস্ট, ইউটিউব ফ্যাশন প্রভাবকদের কাছেও বেশ জনপ্রিয়।

ফ্যাশন প্রভাবকের ইনকাম ও কেরিয়ারের ভবিষ্যাত

একজন প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন প্রভাবক সাধারনত চুক্তিবদ্ধ ব্রান্ডের থেকে আয় করে। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে প্রতিটি পণ্যের বিক্রির অর্থ থেকে কিছু শতাংশ লভ্যংশ নিয়ে থাকে। 

তবে একজন নব্য সোশ্যাল প্রভাবক প্রাথমিক পর্যায়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংএর মাধ্যমে ইনকাম জেনারেট করে। এছাড়াও ইউটিউব-ফেসবুক মত প্লার্টফর্ম থেকে ভিডিও মোনিটাজেশন থেকে মোটা টাকা আয় করা সম্ভব।